
ভারতের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়েছে, এবং এটি এখন আনুষ্ঠানিকভাবেই ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (৬ জুলাই) ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (BCCI) এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (BCB) এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর আগেই, ৫ জুলাই ক্রিকবাজ এই সফর বাতিল হওয়ার সম্ভাবনার খবর প্রকাশ করেছিল।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই বোর্ডের সমঝোতার ভিত্তিতে ছয় ম্যাচের হোয়াইট বল সিরিজ — তিনটি ওয়ানডে এবং তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ — ২০২৫ সালের আগস্ট থেকে পিছিয়ে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আয়োজিত হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “উভয় বোর্ডের মধ্যে আলোচনা শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচি এবং দলগুলোর সুবিধা বিবেচনা করে সিরিজটি পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আশা প্রকাশ করেছে, তারা ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে এই বহুল প্রতীক্ষিত সিরিজে ভারতকে স্বাগত জানাবে। সিরিজের নতুন সূচি এবং তারিখ পরে জানানো হবে বলে জানানো হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত সিরিজটি ১৭ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
বর্তমান সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দৃশ্যমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে সিরিজটি স্থগিত হওয়া অনিবার্য মনে হচ্ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলেছে। যদিও যৌথ বিবৃতিতে নিরাপত্তাজনিত কোনো বিষয়ের উল্লেখ করা হয়নি, তবে সেটিও একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।
সিরিজটি স্থগিত হওয়ার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় যখন বিসিবি পরবর্তী দুই বছরের মিডিয়া স্বত্ব বিক্রির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে। ভারত সফর অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় বিসিবি BCCI-এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছিল।
সফর স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই BCCI নিয়েছে। তবে বছরের অন্যতম বড় টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ নিয়ে এখনো নির্দিষ্ট অবস্থান নেয়নি তারা। বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং মে মাসে উভয় দেশের মধ্যে সংঘাতের প্রেক্ষাপটে, ভারত সরকার এখনো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারত ২০৩৬ সালের অলিম্পিকের আয়োজনের স্বপ্ন দেখছে, এবং সেই প্রেক্ষাপটে মনে করা হচ্ছে যে, সরকার ভারতীয় দলগুলোকে বহুপাক্ষিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণে অনুমতি দিলেও, দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তা সীমিত রাখার নীতি অনুসরণ করছে। পাকিস্তান হকি দলকে আগামী মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে খেলার অনুমতি দেওয়া সেই নীতিরই একটি দৃষ্টান্ত।
উল্লেখ্য, এশিয়া কাপ ২০২৫ সালের ১০ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এবং টুর্নামেন্ট আয়োজকরা এখনো আত্মবিশ্বাসী যে এটি পরিকল্পনামাফিকই হবে। তবে BCCI-এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন, তারা এখনই এই বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলছেন না।