
রাশিয়া বর্তমানে এক অভূতপূর্ব জনসংখ্যা সংকটের মুখোমুখি। দেশটির জন্মহার ২০০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে, যা এতটাই ভয়াবহ যে সরকার এখন তা “রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা” হিসেবে লুকাতে শুরু করেছে।
🔻 জন্মের হার নিয়ে গোপনীয়তা কেন?
২০২৫ সালের মার্চ মাসে দেশটিতে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা এতটাই কম হতে পারে যে, এটি ১৭০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সর্বনিম্ন সংখ্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শীর্ষস্থানীয় ডেমোগ্রাফাররা।
সাধারণত প্রতি মাসে জন্মসংখ্যা প্রকাশ করে সরকার, কিন্তু এবার সেই পরিসংখ্যানও প্রকাশ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি এতটাই সংকটজনক যে তথ্য গোপন করাটাই এখনকার বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
📉 জনসংখ্যার ভবিষ্যৎ চিত্র: ধ্বংসের পথে?
বর্তমান জনসংখ্যা: ১৪৬ মিলিয়ন
২০৪৫ সালের পূর্বাভাস: ১৩২ মিলিয়ন
২১০০ সালের সর্বনিম্ন অনুমান: মাত্র ৮৩ মিলিয়ন!
এটি শুধু সংখ্যা নয়, বরং একটি জাতির ভবিষ্যৎ অস্তিত্বের প্রশ্ন।
🛑 সরকার কী করছে?
জনসংখ্যা সংকট ঠেকাতে রাশিয়ান সরকার নিচের মতো বেশ কিছু কড়া ও বিতর্কিত পদক্ষেপ নিচ্ছে:
“চাইল্ডফ্রি আদর্শ” নিষিদ্ধ: সন্তান না নেওয়ার মতাদর্শকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
গর্ভপাতে কড়াকড়ি: গর্ভপাত সহজলভ্যতা কমাতে কঠোর আইন আনা হচ্ছে।
প্রণোদনা: গর্ভবতী নারীদের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা চালু করা হচ্ছে।
কারাগার থেকে মুক্তি: কয়েদিদের সন্তান জন্মদানে উৎসাহিত করতে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে।
📺 সংস্কৃতিতেও সেন্সর?
রাশিয়ার সংস্কৃতিতেও পরিবর্তনের আভাস মিলছে। ধারণা করা হচ্ছে, Harry Potter বা Sex and the City এর মতো টিভি সিরিজগুলোও সেন্সরের মুখে পড়তে পারে, কারণ এগুলো তথাকথিত “ভুল বার্তা” ছড়ায় বলে দাবি করছে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ।
📌 শেষ কথা
একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তার মানুষের ওপর। জনসংখ্যা শুধু সংখ্যার খেলা নয়, বরং জাতির সক্ষমতা, উন্নয়ন ও টিকে থাকার মাপকাঠি। রাশিয়ার এই সংকট গোটা বিশ্বের জন্যই একটি সতর্ক সংকেত হতে পারে—বিশেষত সেই দেশগুলোর জন্য যাদের জন্মহার দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।
📚 সূত্র: Newsweek