
দেশের অন্যতম অনলাইন টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম Flight Expert এখন বড় এক প্রতারণার অভিযোগের মুখে। প্রতিষ্ঠানটি হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে মালিকপক্ষ গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী গ্রাহক ও ট্রাভেল এজেন্টদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে Flight Expert-এর ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফোন, ইমেইল ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত তাদের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে—অফিসে তালা ঝুলছে।
একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তাঁরা হজ, ওমরাহ, চিকিৎসা, উচ্চশিক্ষা ও পারিবারিক ভ্রমণের উদ্দেশ্যে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে ফ্লাইট বুকিং করেছিলেন, কিন্তু নির্ধারিত সময়েও তাঁরা টিকিট পাননি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সালমান বিন রশিদ শাহ সাইম গোপনে দেশত্যাগ করেছেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রতিষ্ঠানটির ব্যালান্স থেকে কোটি কোটি টাকা সরিয়ে ফেলে দেন এবং বিদেশে পাড়ি জমান।
প্রতিষ্ঠানের হেড অব কমার্শিয়াল সাইদ আহমেদ ইতোমধ্যে মহাখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (GD) করেছেন, যেখানে মালিকপক্ষকে টাকা আত্মসাতের জন্য দায়ী করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, “আমি নিজেও প্রতারিত, আমি তদন্ত চাই।”
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শুধু সাধারণ গ্রাহকই নয়, বহু ছোট ট্রাভেল এজেন্টও। এজেন্টরা অভিযোগ করছেন, তারা লাখ লাখ টাকা Flight Expert-এর অ্যাকাউন্টে অগ্রিম জমা দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো সেবা না পেয়ে এখন তাঁরা ধ্বংসের মুখে।
বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ATAB) জানিয়েছে, Flight Expert পূর্বে ৫০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়েছিল, যার মেয়াদ ৩১ জুলাই শেষ হয়েছে এবং তা নবায়ন করা হয়নি। ATAB বলেছে, তারা এ ব্যাপারে সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির পক্ষ থেকেও ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে Flight Expert নিয়ে হাজারো পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখছেন—“আমার টিকিটের টাকা গেল কোথায়?”, “এভাবে হাজার হাজার মানুষের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কি সম্ভব?” অনেকে আবার সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।
১. Flight Expert-এর মালিকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হোক।
২. গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
৩. অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্মগুলোর উপর কঠোর নজরদারি এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হোক।
🔗 তথ্যসূত্র:
👉 আপনি যদি এই ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি করুন এবং প্রমাণপত্র সহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানান।